শিশুর খাবার ও পুস্টিশিশুর খাবার ও পুস্টি
শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় ১০ টি পুস্টি
১. ক্যালসিয়াম:
মজবুত হাড় ও দাঁত, স্নায়ু ও পেশী তৈরীতে সাহায্য করে।খাদ্যকে শক্তিতে রুপান্তরিত করে এবং রক্ত জমাট বাধায় সাহায্য করে। দুধ, দই, পনির ও পুডিং থেকে ক্যালসিয়াম পাবেন।এছাড়া শিশুর খাবার তৈরীতে পানির পরিবর্তে দুধ ব্যবহার করতে পারেন।
২. এসেনসিয়াল ফ্যাটি এসিড:
কোষ ও স্নায়ু তৈরীতে সাহায্য করে।রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।পুস্টি শোষণে শরীরকে সাহায্য করে।সয়াবিন তেল, বাদাম তেল,ডিম, কমলার রস ও সামুদ্রিক মাছ থেকে এসেনসিয়াল ফ্যাটি এসিডের চাহিদা পূরণ হবে।
৩. আয়রন:
রক্তের হিমোগ্লোবিন তৈরীতে সাহায্য করে।আয়রনের অভাবে অ্যানেমিয়া দেখা দিতে পারে।মাংস, পালংশাক, কলিজা, লালশাক ও সিমের বিচি আয়রনের ভাল উৎস।
৪.ম্যাগনেশিয়াম:
হাড় মজবুত করে, হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক রাখে ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।বাদাম, সয়ামিল্ক, গম, কলা ও অ্যাভোকাডো থেকে ম্যাগনেশিয়াম চাহিদা পূরন হবে।
৫.পটাশিয়াম:
শরীরে পানির ভারসাম্য রক্ষা করে।কিডনীতে পাথর ও ওস্টিওপোরোসিস হওয়ার ঝুকিঁ কমায়।টমেটো,কলা,কমলা,তরমুজ ও আলুতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে।
৬.ভিটামিন এ:
চোখের দৃস্টি ভাল রাখে ও হাড়ের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।ইনফেকশন থেকে শরীরকে রক্ষা করে।নখ,চামড়া ও চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।সবধরনের রঙিন শাক সবজি, ছোটমাছ ও ফলমূল থেকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ পাওয়া যায়।
৭.ভিটামিন সি:
লোহিত রক্ত কনিকা, হাড় ও কোষের গঠন ও পুনরায় গঠনে সাহায্য করে।স্ট্রবেরী,লেবু,আঙ্গুর,আম,কাঁচা টমেটো,কলা,পেপে ও পেয়ারাতে ভিটামিন সি থাকে।
৮.ভিটামিন ডি:
শরীরে ক্যালসিয়াম শোষণে ও হরমন তৈরীতে সাহায্য করে।হাড় ও দাঁতের গঠন মজবুত করে।দই,সামুদ্রিক মাছ ও সূর্যের আলো থেকে ভিটামিন ডি পাওয়া যায়।
৯.ভিটামিন ই:
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।আঙ্গুর,আম,বাদাম ইত্যাদিতে ভিটামিন ই পাওয়া যায়।
১০. জিংক:
জিংক হজম, বিপাক ও বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় ।মুরগির বুকের মাংশ, মটরশুটি, দুধ, পনির, বিভিন্ন ধরনের বাদামে প্রচুর পরিমাণে জিংক পাওয় যায়।
শিশুদের ক্ষেত্রে সলিড বা শক্ত খাবার হচ্ছে বুকের দুধ ছাড়া নরম করে তৈরী করা পুস্টিকর খাবার।শিশুরা সাধারণত সলিড খাবার ছয় মাস বয়স থেকেই খেতে পারে।তবে কিছু শিশু আগেই সলিড খাবারের প্রতি আগ্রহ দেখায়।কিছু লক্ষণ দেখে বুঝতে পারবেন যে শিশুটি শক্ত খাবার খেতে পারবে-
যদি শিশুটি তার মাথার ভারসাম্য বজায় রেখে ঠিকমত বসতে পারে
২. বুকের দুধ বা বোতলের দুধ খাওয়নোর পরও যদি শিশুকে ক্ষুধার্ত মনে হয়।
১. যদি শিশুটি তার মাথার ভারসাম্য বজায় রেখে ঠিকমত বসতে পারে
৩. বড়দের খেতে দেখে যদি খাবারের প্রতি আকৃষ্ট হয় এবং খাবার দেখে যদি মুখ খোলে।
সলিড খাবার হিসাবে কি খাওয়াবেন?
শিশুদের জন্য তৈরী সিরিয়াল, ডিমের কুসুম খাওয়াতে পারেন। এছাড়া সবজি ও মাংশ নরম করে খাওয়াতে পারেন এবং তাজা ফলের রস দিতে পারেন।অবশ্যই খেয়াল রাখবেন শিশুর গলায় যাতে খাবার আটকে না যায়। একটু বড় হলে নিজের হাতে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতে করে খাবার চিনতে শিখবে ও মনে রাখার চেস্টা করবে।
মনে রাখবেন প্রত্যেকটিই শিশুই ভিন্ন এবং তাদের আচার আচরণও ভিন্ন। তাই আপনার শিশুকে দেখে আপনি বুঝতে পারবেন কখন সে সলিড খাবার খাওয়ার জন্য তৈরী।
বুকের দুধের পাশাপাশি কি খাবার খাওয়াবেন?
শিশুকে ছয় মাসের পর থেকে ২ বছর পর্যন্ত বুকের দুধের পাশাপাশি পুস্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ানো উচিত।
খাবার প্রস্তুত ও খাওয়ানো সময় অবশ্যই হাত ভালভাবে ধুয়ে নিতে হবে।খাবার প্রস্তুতের পর স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ২ ঘন্টার বেশি রাখা উচিত নয় এবং বিশুদ্ধ পানি ব্যবহার করুন।
কি খাওয়াবেন
১. ভাত/রুটি
২. মাছ, মাংস, ডিম
৩. দুধ বা দুধ জাতীয় খাবার
৪. রঙিন শাক সবজি ও ফলমূল
৫. বিভিন্ন ধরনের ডাল
কতটুকু খাওয়াবেন ও কতবার খাওয়াবেন
বয়স | কতবার খাওয়াবেন | কতটুকু খাওয়াবেন |
---|---|---|
৬-৮ মাস | দিনে ২ বার, শিশুর ক্ষুধা ও রুচি অনুযায়ী।হালকা খাবার ১-২ বার। | ২-৩ টেবিল চামচ দিয়ে শুরু করুন।প্রত্যেক বেলায় ২৫০ মি. লি. বাটির অর্ধেক বা তার কম। |
৯-১১ মাস | দিনে ৩ বার, শিশুর ক্ষুধা অনুযায়ী।হালকা খাবার ১-২ বার। | প্রত্যেক বেলায় ২৫০ মি. লি. বাটির অর্ধেক। |
১২-২৩ মাস | দিনে ৩ বার, শিশুর ক্ষুধা অনুযায়ী।হালকা খাবার ১-২ বার। | প্রত্যেক বেলায় ২৫০ মি. লি. এর সম্পূর্ন বাটি । |
অবশ্যই খাবারগুলো নরম করে খাওয়াতে হবে।খাবার ধৈর্য ধরে আস্তে অস্তে খাবার খাওয়ান।খেতে না চাইলে জোর করে খাওয়াবেন না।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আপনার মতামত আমাদের কাছে অনেক মুল্যবান,তাই মুল্যবান মতামত আমাদের কে জানান