পরিণত বয়সের নারী-পুরুষ অনেকের কাছে যে সমস্যা অনেক সময় প্রকট হয়ে উঠে তা হলো যৌন দূর্বলতা, যার কারণে অনেক সময়ই দম্পতি মানসিক অশান্তিতে ভোগেন। অনেক অবিবাহিত এমনকি যৌন ক্রিয়ায় অংশ গ্রহন করেনি এমন অনেকেও কিন্তু এই সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হন।
আসলে আমাদের সমাজে অধিকাংশ মানুষেরই এ বিষয়ে সংকোচ বেশি থাকার কারণে প্রকৃত তথ্য থেকে অনেকে বঞ্চিত হন, তেমনি অনেক অপসংস্কার বা কুসংস্কার এই দূর্বলতার কারণে সমাজে বাসা বেধে আছে। যৌন দূর্বলতায় নারী বা পুরুষ উভয়েই আক্রান্ত হতে পারে তবে যৌন কার্যে নারীর ভূমিকা অনেক খানি পরোক্ষ বিধায় পুরুষকেই এই সমস্যা নিয়ে বেশী উদবিগ্ন হতে দেখা দেয়।
নারী পুরুষ মিলিয়ে এ ধরণের রোগির সংখ্যা শতকরা ১০ থেকে ২০ শতাংশ। একটু ভেবে দেখলে বোঝা যাবে এটা মোটেই ফেলে দেবার মতো কোনো সংখ্যা নয়।বিজ্ঞাপন হরনি গোট উইড-দাম্পত্য সুখের জন্য প্রথমে পুরুষের ব্যাধি নিয়ে আলাপ করা যাক। এজন্য প্রথমেই জেনে নিতে হবে একজন পুরুষের যৌন বিষয়ক শারীরবৃত্তীয় কাজ গুলো কি কি।
১। যৌন ইচ্ছা (Libido-লিবিডো) বা সেক্সুয়াল ডিজায়ার থাকা;
২। লিঙ্গত্থান বা ইরেকশন (Irection) হওয়া, যা পুরুষাঙ্গে রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধি পাবার কারনে হয়;
৩। পুরুষাঙ্গ দিয়ে ধাতু (Semen-সিমেন) নির্গমন (Ejaculation)
এর সাথে সংশ্লিষ্ট আরেকটি term ও জেনে নেয়া যেতে পারে আর তা হলো Detumescence বা পুরুষাঙ্গের শিথিলতা। এসব কিছুর মধ্যে পুরুষের লিঙ্গ উত্থানে সমস্যা বা ইরেকটাইল ডিজফাংশন টিই প্রকট সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত।এই সমস্যাটি নানাবিধ কারনে হতে পারে।এর বড় একটা কারন হলো মনস্তাত্বিক, এছাড়া কিছু হরমোনের অভাব অথবা মস্তিস্কের রোগের কারনেও এমনটি হতে পারে।
পুরুষাঙ্গের ধমনি (রক্তনালী) সরু হয়ে যাওয়া কিংবা শিরার যথেষ্ট পরিমাণ রক্ত ধারণ করতে না পারাটাও এমন সমস্যার জন্ম দেয়। কারন গুলোকে ঠিকভাবে চিহ্নিত করলে একটা স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যেতে পারে
১. বার্ধক্যঃ আসলে বয়স বাড়াটা লিঙ্গোত্থানের ব্যর্থতার কোনো সমস্যা নয়, বরং বয়স বাড়ার সাথে সাথে শারীরবৃত্তীয় এবং মানসিক যেসব পরিবর্তন হয় তা অনেক সময় এতে প্রভাব ফেলে।
২. কিছু কিছু রোগের কারনে পুরুষের এমন সমস্যা হতে পারে যেমন-ডায়াবেটিস হওয়া, স্থুলতা, অন্য এন্ডোক্রাইন বা হরমোনের সমস্যা দেখা দেয়া, প্রস্টেট গ্রন্থি বড় হয়ে যাওয়া, উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন হওয়া ইত্যাদি।
৩. ধুমপানঃ ধুমপান একদম প্রত্যক্ষ ভাবে লিঙ্গত্থান ব্যর্থ হবার একটি বড় কারন।
৪. অসুধঃ কিছু কিছু অসুধ আছে যা পুরুষের অমন ক্ষমতা কমিয়ে দেয়, এর মধ্যে আছে মানসিক রোগের অসুধ, কিছু স্টেরয়েড, উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগের অসুধ, নেশা উদ্রেককারী অসুধ যেমন কোকেন, গাজা, অধিকমাত্রায় এলকোহল সেবন ইত্যাদি।
৫. মেরুদন্ডের অভ্যন্তরে যে মজ্জা থাকে (spinal cord) তাতে আঘাত পেলে কিংবা তা রোগাক্রান্ত হলেও এমন সমস্যা দেখা দেয়।
৬. পুরুষাঙ্গের নিকটবর্তী স্থানে রেডিওথেরাপী দিলেও এমন সমস্যা হতে পারে।
৭. এছাড়া ডিপ্রেসন, এঙ্গার কিংবা বিভিন্ন মানসিক চাপ বা উত্তেজনার কারনেও লিঙ্গোত্থানে সমস্যা দেখা দেয়।
চিকিৎসাঃ যে কোন যৌন রোগ বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে চিকিৎসা নিতে হবে ।
যৌন ইনফেকশন
সাধারণত যৌন ইনফেকশনের জন্য যৌন সংসর্গ দায়ী। মুখে ও যৌনাঙ্গে শরীরের স্পর্শকাতর কোথাও যৌন সংক্রামক ব্যাধি থেকে থাকলে তা অপরকে আক্রান্ত করে থাকে সাধারণত পাঁচটি যৌন অসুখ পৃথিবীতে দেখতে পাওয়া যায়। এর মধ্যে সিফিলিস এবং গনোরিয়া প্রধান। এ ছাড়াও স্যাক্রয়েড, লিম্ফগ্রানোলোমা বেনেরাস এবং গ্রানোলোমা ইনজিনুয়াল অপর কিছু যৌনরোগ। নারীদের যৌন সংক্রামক রোগ হয় সাধারণত বহুগামিতার ফলে। অপরদিকে সমকামিতা এবং পতিতা সহবাসের জন্য পুরুষের যৌন সংক্রামক রোগ হতে পরে। নারী পুরুষ উভয়ের জন্য যৌন সংক্রামক রোগ যৌন জীবনের জন্য খুব ঝুঁকিপূর্ণ। নারী স্বাস্থ্যের ব্যাপারে আলোচনায় যৌন সংক্রামক নানা বিষয়ে আলোচনা করা উচিত।
- যৌন সমস্যার চিহ্ন এবং উপসর্গ;
- যোনিতে বা ভালভাতে র্যাস;
- পায়ুর কাছাকাছি র্যাস;
- কুচকিতে র্যাস;
- নারীর স্তনে জ্বালাপোড়া;
- ঝিমুনি ভাব;
- যোনির মাথায় ঘামাচির মতো দানা;
- যৌনমিলনে ব্যথা;
- যোনির অস্বাভাবিক সমস্যা;
- শরীরের অন্যান্য চিহ্ন এবং উপসর্গ;
- দ্রুত চুল হারানো;
- চোখের ইনফেকশন;
- পুঞ্জ পুঞ্জ মাথা ব্যথা;
- ঠোঁটের র্যাস;
- শরীরের অন্যান্য স্থানে র্যাস;
- চামড়ায় ফুসকুড়ি;
- হাতে এবং হাতের আঙ্গুলের র্যাস;
হাইজিন নির্দেশনা-
১. প্রতি দিন নিয়মিত যৌনাঙ্গ ধোয়া;
২. সুতির অন্তর্বাস পরা;
৩. রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে যৌনাঙ্গ ধোয়া;
৪. পায়ু সামনের দিক থেকে পেছনের দিকে ধোয়া;
৫. প্রতিদিন অন্তর্বাস পরিবর্তন করা;
৬. যৌনসঙ্গীর ইনফেকশন আছে কিনা সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া;
৭. যৌনমিলনের আগে অবশ্যই পুরুষকে কনডম ব্যবহার করতে বলা;
৮. যৌনমিলনের আগে এবং পরে নারীর যৌনাঙ্গ ধুয়ে ফেলা;
৯. যৌনমিলনের পরে মূত্র ত্যাগ করা;
১০ নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা;
১১. যৌন আচরণ যেন অবাধ না হয় সেদিকে খেয়াল রাখা;
১২. যৌনসঙ্গী বা সঙ্গিনীর ডাক্তারী পরীক্ষা করানো।