![]() |
শিশুর টিকা
শিশুর টিকার সময়সূচি
০-১১ মাস এবং ১৫ মাস বয়সের শিশুদের টিকাদান সময়সূচি
রোগের নাম | টিকার নাম | টিকার ডোজ | ডোজের সংখ্যা | ডোজের মধ্যে বিরতি | টিকা শুরু করার সঠিক সময় | টিকাদানের স্থান | টিকার প্রয়োগ পথ |
---|---|---|---|---|---|---|---|
যক্ষ্মা | বিসিজি | ০.০৫ মি. লি. | ১ | - | জন্মের পর থেকে | বাম বাহুর উপরের অংশে | চামড়ার মধ্যে |
ডিফথেরিয়া, হুপিংকাশি ধনুষ্টংকার, হেপাটাইটিস-বি, হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা-বি | পেন্টাভ্যালেন্ট ভ্যাকসিন (ডিপিটি হেপাটাইটিস-বি, হিব) | ০.৫ মি. লি. | ৩ | ৪ সপ্তাহ | ৬ সপ্তাহ | উরুর মধ্যভাগের বহিরাংশে (১ম-বাম, ২য়-ডান, ৩য়-বাম উরুতে) | মাংসপেশী |
নিউমোকক্কাল নিউমোনিয়া | পিসিভি ভ্যাকসিন | ০.৫ মি. লি. | ৩ | ৪ সপ্তাহ | ৬ সপ্তাহ | উরুর মধ্যভাগের বহিরাংশে (১ম- ডান, ২য়-বাম, ৩য়-ডান উরুতে) | মাংসপেশী |
পোলিও মাইলাইটিস | ওপিভি | ২ ফোঁটা অথবা নির্দেশ অনুসারে | ৪* | ৪ সপ্তাহ | ৬ সপ্তাহ | মুখে | মুখে |
হাম ও রুবেলা | এমআর টিকা | ০.৫ মি. লি. | ১ | - | ৯ মাস বয়স পূর্ণ হলে | উরুর মধ্যভাগের বহিরাংশে (ডান উরুতে) | চামড়ার নিচে |
হাম | হামের টিকা | ০.৫ মি. লি. | ১ | - | ১৫ মাস বয়স পূর্ণ হলে | উরুর মধ্যভাগের বহিরাংশে (বাম উরুতে) | চামড়ার নিচে |
*ওপিভি টিকা মোট ৪ (চার) ডোজ দিতে হবে। ৪র্থ ডোজটি এমআর টিকার সাথে দিতে হবে। এছাড়াও জন্মের ১৪ দিনের মধ্যে ওপিভির অতিরিক্ত ডোজ দেয়া যেতে পারে।
উপরের সময়সূচি অনুযায়ী সবগুলো টিকার ডোজ শেষ করতে হবে। এই নিয়ম মেনে টিকা না দিলে টিকা অকার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।
কার্যকর টিকা :
সঠিক সময়সূচি অনুসরণ করে এবং ন্যূনতম বিরতি মেনে টিকা প্রদান করলে সে টিকাকে কার্যকর টিকা বলে।যেমন: শিশুর জন্মের ৬ সপ্তাহ বা ৪২ দিনের পর প্রথম ডোজ পেন্টাভ্যালেন্ট টিকা অথবা ৯ মাস শেষ হয়ে ১০ মাস/২৭০দিন পর এমআর টিকা দিলে তা কার্যকর টিকা হবে।
অকার্যকর টিকা :
সঠিক সময়সূচি অনুসরণ না করে অথবা ন্যূনতম বিরতির আগে টিকা প্রদান করলে সে টিকাকে অকার্যকর টিকা বলে।যেমন: পেন্টাভ্যালেন্ট টিকার দ্বিতীয় ডোজ প্রথম ডোজের ২৮ দিনের আগে দিলে তা অকার্যকর টিকা হবে।
টিকার সামান্য পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া দেখা দিলেও তা খুব কম ক্ষেত্রেই মারাত্মক হয়ে থাকে। নিচের চার্টে বিভিন্ন টিকার সম্ভাব্য কী কী পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া ও জটিলতা হতে পারে এবং সেক্ষেত্রে কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে তা দেখানো হলো:
টিকা | সম্ভাব্য পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া | ব্যবস্থাপনা |
---|---|---|
বিসিজি |
| কোনো ওষুধ বা তেল ক্ষতে দেয়া যাবে না।টিকার স্থান খোলা রাখতে হবে। নিজ থেকেই ক্ষত শুকিয়ে যাবে |
পেন্টাভ্যালেন্ট ভ্যাকসিন |
| কিছুদিনের মধ্যে ভালো হয়ে যাবে। শিশুকে বার বার মায়ের দুধ খাওয়াতে হবে। |
পিসিভি |
| কিছুদিনের মধ্যে ভালো হয়ে যাবে। শিশুকে বার বার মায়ের দুধ খাওয়াতে হবে। |
ওপিভি | পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া নেই | - |
এমআর |
| কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন নেই। ব্যথা এমনিতেই সেরে যাবে। শিশুকে বার বার মায়ের দুধ খাওয়াতে হবে। এছাড়া স্বাভাবিক খাবারের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণ তরল খাদ্য দিতে হবে। |
হাম |
| কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন নেই। ব্যথা এমনিতেই সেরে যাবে। শিশুকে বার বার মায়ের দুধ খাওয়াতে হবে। এছাড়া স্বাভাবিক খাবারের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণ তরল খাদ্য দিতে হবে। |
টিটি |
| কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন নেই। ব্যথা এমনিতেই সেরে যাবে। |
পেন্টাভ্যালেন্ট ভ্যাকসিন |
|
|
এমআর ভ্যাকসিন |
| দ্রুত চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের কাছে নিতে হবে। |
সকল টিকার ক্ষেত্রে | যদি টিকাদান প্রয়োগ কৌশল ত্রুটিপূর্ণ হয় তাহলে টিকা দেয়ার ফলে টিকার স্থানে ফোঁড়া হতে পারে অথবা চামড়া লাল এবং ফুলে যেতে পারে। | দ্রুত চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের কাছে নিতে হবে। |
ইনজেকশনের স্থানে ফোঁড়া হলে করণীয়:
যদি ইনজেকশন দেওয়ার ৪-১০ দিন পরে ইনজেকশনের স্থান গরম, লালচে, অনেকটা জায়গা নিয়ে শক্ত হয়ে যায় ও ঐ স্থানে অনেক বেশি ব্যথা হয়, তাহলে মনে করতে হবে এটা ইনফেকশনের লক্ষণ এবং ফোঁড়া সৃষ্টি হচ্ছে। এই সময় টিকা গ্রহণকারীর জ্বর আসতে পারে।চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের কাছে নিতে হবে।ফোঁড়া হলেও পরবর্তী টিকার ডোজ ও পরবর্তী টিকা সময়সূচি অনুযায়ী অবশ্যই দিতে হবে।
কখন টিকা দেওয়া যাবে?
- প্রায় সকল অবস্থায়ই টিকা দেয়া যায়। টিকা দিলে যে সামান্য জ্বর বা ব্যথা হয় তার চেয়ে টিকা না দিয়ে রোগাক্রান্ত হওয়া অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ ।
- অপুষ্টিতে ভুগছে এমন শিশুকে অবশ্যই টিকা দিতে হবে। এই সব শিশুর দেহে রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা কম থাকে। সুতরাং তার প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করার জন্যই টিকা দেয়া বেশি জরুরি।
- পূর্বে শরীরে কোনো দানা উঠে থাকলে অথবা অতীতে হাম/রুবেলা হয়ে থাকলেও সেই শিশুকে ৯ মাস বা ২৭০ দিন পূর্ণ হলে ১ ডোজ এমআর টিকা এবং ১৫ মাস বয়স পূর্ণ হলে হামের ২য় ডোজ টিকা দিতে হবে।
কখন টিকা দেয়া যাবে না?
কেবলমাত্র নিম্নেউল্লেখিত কারণগুলোতেই টিকা দেয়া যাবে না
- অসুস্থ শিশুকে টিকা দেয়া যাবে না।
- পূর্ববর্তী পেন্টাভ্যালেন্ট টিকা দেয়ার পর শিশুর খিঁচুনি বা অজ্ঞান হলে পরবর্তী পেন্টাভ্যালেন্ট টিকার ডোজ দেয়া যাবে না। এই ক্ষেত্রে পেন্টাভ্যালেন্ট টিকার বদলে ১ ডোজ টিটি টিকা দিতে হবে এবং শিশুকে অন্যান্য সকল টিকা (ওপিভি, এমআর, হাম) নিয়ম অনুযায়ী দিতে হবে।
পূর্ববর্তী টিকা দেয়ার পর কোনো মারাত্বক পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া হলে পরবর্তী টিকা দেয়ার পূর্বে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
আপনার মতামত আমাদের কাছে অনেক মুল্যবান,তাই মুল্যবান মতামত আমাদের কে জানান